নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের রাজত্ব কায়েমসহ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ যেন মগের মুল্লুক। কোন আইনের তোয়াক্কাই করছেন না ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। একের পর এক নানা অঘটন ঘটিয়ে এবারে ওয়াসার কিছু বোর্ড সদস্যকে দিয়ে কমিটি গঠন করে তাদের দিয়ে বন্ধের দিনে গোপনে পরীক্ষা নিয়ে চুড়ান্ত করেছে ২৬ জন প্রার্থীকে যারা ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত আছেন।
ওয়াসা সুত্রে জানা যায়,্ চট্টগ্রাম ওয়াসার কেডব্লিউএসপি-২ প্রকল্পে ওয়াসার এমডির ভাগিনী জামাই আবু নোমান সিদ্দিকীসহ ৫ জন সহকারী প্রকৌশলী এবং  ২১ জন উপসহকারী প্রকৌশলীসহ ২৬ জন কর্মরত আছেন।

দীর্ঘদিন ভাগ্নে জামাইকে রাজস্ব খাতে আনার চেষ্টা করছিলেন ওয়াসা এমডি। ওয়াসার বতর্মান বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম আইনী জটিলতা এড়াতে এমডির প্রস্তাবে এতো দিন প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব খাতে অন্তুর্ভুক্তি করতে সম্মতি না দেওয়াতে আটকে ছিল এমডির এ বাসনা। সম্প্রতি তিনি সম্মতি দেওয়াতে গতকাল বিকেলে বন্ধের দিন ওয়াসার মূল গেইট বন্ধ করে প্রার্থীদের  মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
আইনী জটিলতা থাকায়  বোর্ড কমিটিতে  জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য এডভোকেট মুজিবুল হক থাকার প্রয়োজন থাকলেও তাকেই রাখা হয় নি। পরীক্ষা কমিটিতে বোর্ডের প্রকৌশলী মোঃ হারুন, প্রকৌলী জাফর আহমদ ছাদেক এবং ডাঃ সফিউল আজমসহ৩ জন সদস্য ছিলেন, আর সচিবের দায়িত্বে ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াসার এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, আইন না মেনে যখন এত বেশী মানুষের গোপনে রাজস্ব বিভাগে চাকুরী হয়, তখন বুঝে নিতে হবে এখানে অনেকের স্বার্থ জড়িত এবং লেনদেন ও কয়েক কোটি। এ ব্যাপারে কথা বলে চাকুরীকে ঝুঁকিতে ফেলতে আমরা রাজি নই।
এদিকে প্রকল্পের জনবলকে রাজস্বখাতে না আনতে ২০১৭ সালের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সিভিল আপিল নং ৪৬০ এবং ২০১৮ সালের সিভিল রিভিও পিটিশন নং ১৮১১  মামলার রায়ে আপিল বিভাগ প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব খাতে আত্মীয়করণ না করতে সুস্পষ্ট আদেশ রয়েছে।
২০২০ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেত্বত্বে আপিল বিভাগের ৬ জন বিচারপতি এ আদেশ দিয়ে প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে না আনার নিদের্শনা দেন।
এ পরপরই সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের আইন অধি শাখা হতে আপিল বিভাগের নির্দেশনা সংযুক্ত করে প্রয়োজরীয় ব্যবস্থা নিতে উপ সচিব তানভীর আহমেদ নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি উক্ত নির্দেশনায় বলেন, আপিল বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প হতে রাজস্ব খাতে আত্মীয় করনের আদেশ রহিত করেন। এছাড়াও আদালতের একাধিক পর্যবেক্ষণ প্রদান করেন, তা মানতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের একাধিক নির্দেশনা অনুসরনের অনুরোধ করেন।
এর আগেও কোন সংবিধিবদ্ধ বিধান না থাকলে প্রকল্পের কোন জনবলকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তি না করতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি ওবাইদুল হাসান এবং বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের সমস্বয়ে গঠিত আপিলবেঞ্চ এই রায় দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে জানতে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।