নিউজগার্ডেন ডেস্ক: গত জানুয়ারী মাসে হাটহাজারী উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি আজ পর্যন্ত উপজেলায় ও কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে কোন রকম সভা বা বৈঠক করার কোন রকম উদ্যোগ গ্রহন করেত পারে নাই। সম্প্রতি একাধিক ইউনিয়নে ত্যাগী, নির্যাতিত ও দক্ষ সংগঠক, নেতা-কর্মীদের না জানিয়ে সভা-সম্মেলন ব্যতিরেকে জৈনক ব্যক্তির ইচ্ছা মাফিক পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়ে অনেকটা পকেট কমিটির মত ইউনিয়ন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। হাটহাজারী আসনের ৪ বারের নির্বাচিত সাংসদ ও সাবেক হুইপ মরহুম সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের কন্যা

ব্যারিষ্টার সাকিলা ফারজানা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস.এম ফজলুল হকের অনুসারী যোগ্য দক্ষ সংগঠকদের বাদ দিয়ে ব্যারিষ্টার মীর হেলালের নির্দেশে তার অনুসারী ও বিতর্কিত ব্যক্তিসহ গুটি কতেকজন ব্যক্তি হাটহাজারীতে এহেন অসাংগঠনিক ও বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে। এ অসাংগঠনিক কর্মকান্ড ও ঘরে বসে এমনকি শহরের চট্টেশ্বরী রোডে মীর হেলালের বাসায় সম্মেলনের নামে যে তামাসা করে যাচ্ছে এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে হাটহাজারী সকল ইউনিয়ন ও পৌর সভা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

শনিবার (১২ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে অবিলম্বে এ অসাংগঠনিক ও তামাসার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক প্রদক্ষেপ গ্রহন করে প্রত্যেক ইউনিয়নে দলের দুঃসময়ের সমস্ত নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সাংগঠনিক যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে উপজেলা, পৌর ওয়ার্ড ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন ও সম্মেলন করার লক্ষ্যে দলীয় হাই কমান্ডের হস্তক্ষেপ দাবী করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, এ দাবী নিয়ে কয়েকদিন পূর্বে হাটহাজারীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ লিখিত দলীয় হাই কমান্ডের নিকট আবেদন করেছেন। আজ প্রতিবাদের মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য নেতৃবৃন্দগণ আহবান জানান ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত ১/১১ অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হতে ২০১৮ সালের পরবর্তী সময়েও আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে হাটহাজারী উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা- কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিএনপি'র মাননীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস.এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে হাটহাজারী উপজেলা ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড এবং উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সমাজের নানান্তরের গুনী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপিকে সুসংগঠিত ও দৃঢ় মজবুত করা হয়েছে। ওয়ার্ড কমিটি ওয়ার্ডে এবং ইউনিয়ন কমিটি ইউনিয়নে সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরবৃন্দের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি দলের নির্দেশনা মোতাবেক বিগত সময়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহনের মাধ্যমে প্রায় সব ইউনিয়ন এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, হাটহাজারী উপজেলা বিএনপি'র রাজনৈতিক কর্মকান্ডে দীর্ঘদিন ধরে প্রাক্তন সংসদ সদস্য মরহুম সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, প্রাক্তন মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস.এম ফজলুল হক দলের বৃহত্তর স্বার্থে তাঁদের ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হলেও আজ দুঃখজনক সত্য যে, বর্তমান সে ধারা অনুসরণ না করে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর হেলালের নেতৃত্বে তাঁর ইচ্ছা মোতাবেক তৃণমূলের মতামত না নিয়ে মনগড়া লোক দিয়ে এককভাবে পকেট কমিটি করে যাচ্ছে, যা এ দুঃসময়ে দলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাছাড়া আরো উল্লেখ্য যে, মূল দল ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন সমূহে এক ব্যক্তিকে একাধিক পদে অন্তর্ভূক্ত করে সংগঠনকে দিন দিন সংকুচিত করা হচ্ছে। হাটহাজারীতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্ব বা দায়িত্ব পালনের জন্য যোগ্য ও দক্ষ সংগঠকের অভাব নেই তাছাড়া বিগত দিনে আমাদের দলের অনেক নেতৃবৃন্দ ইউ.পি চেয়ারম্যান ও মেম্বার হয়েছে দলের কাজে নানা পেশাজীবি শিক্ষিত ব্যক্তিগন নিবেদিত ছিলেন অথচ তাদের কোন রকম মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এছাড়া জেলা বিএনপির নানা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ব্যক্তিবর্গ যারা দলের প্রতিষ্ঠাকালে ছাত্রদল যুবদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁদেরও কোন জায়গায় স্থান বা মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এমনকি বিগত সময়ে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সাবেক ভাইস-চেযারম্যান দলের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদককেও কোন কমিটিতে রাখা হয়নি, তাতে হাটহাজারীর সর্বস্তরের বিএনপি নেতা-কর্মীরা হতবাক হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে চলতি বছরেই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি জেলার আওতাধীন উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি'র কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যাতে কোন যোগ্য সংগঠককে বাদ দেয়া না হয় সে জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক থানা কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিটি উপজেলায় একটি সমন্বয়ক টিম গঠন করে দিয়েছে। হাটহাজারীতেও মিরসরাই উপজেলার নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, সীতাকুন্ডের কাজী সালাউদ্দিন ও রাঙ্গুনিয়ার শওকত আলী নূরকে নিয়ে ৩ সদস্যের একটি টিম গঠিত হয়। গঠিত এ টিমের কোন পরামর্শ বা নির্দেশনা কোনক্রমেই হাটহাজারী উপজেলা আহবায়ক কমিটি গ্রহন করছেন না। এ টিম সকল নেতৃবৃন্দের অনুসারীদের নিয়ে সমন্বয় বৈঠকের মাধ্যমে সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের নিয়ে যৌথ সভার প্রস্তাবনা করা হলেও হাটহাজারী উপজেলা আহবায়ক কমিটি তা গ্রহন করছেন না বরং দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতৃবৃন্দকে উপেক্ষা করে থানা ও পৌরসভা আহবায়ক কমিটি একগুঁয়েমী ও স্বেচ্চাচারীভাবে এহেন কার্যক্রম দলকে সুসংহত করার প্রশ্নে দল চরম ক্ষতিগ্রস্থের সম্মুখীন হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, উপরোক্ত সমস্যার বিষয়ে ৭ নভেম্বর আমরা হাটহাজারীর কয়েজন সম্মানিত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের সাথে তাঁর বাসভবনে আলোচনা শেষ করে বের হলেই মীর হেলালের অনুসারীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী স্টাইলে হাটহাজারী থানা বিএনপি'র সম্পাদক মন্ডলীর সাবেক সদস্য এবং ১নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শফিউজ্জামানকে প্রকাশ্যে হেনস্থা করে। এ ধরণের অসাদাচরণ দলের ঐক্যবন্ধনে চরম অন্তরায় ছাড়া কিছু নয়। তাছাড়া এসব ন্যাক্কারজনক আচরণ কর্মী-সমর্থকের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে যা দলের সুনাম চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এমতাবস্থায় দুঃসময়ে দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং দলকে তৃণমূলে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উপরোক্ত বিষয়ে জরুরীভাবে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহনের জন্য হাই কামন্ডের নিকট এ প্রতিবাদের মাধ্যমে সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিবৃতি দিয়েছেন সাবেক সি. সহ সভাপতি প্রফেসর মির্জা শহীদুল্লাহ বাবুল, হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হারুন উর রশীদ চেয়ারম্যান, সাবেক সহ সভাপতি এম.নুরুন্নবী তালুকদার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুহম্মদ মীর কাশেম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গাজী জাফর আলম, আলহাজ্ব কে.এম আজিজ আহমেদ, সাফায়েতুল ইসলাম সাবাল, ফরাহাদবাদ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফরিদ আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউজ্জামান, ধলই ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি একরাম হোসেন চৌধুরী সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম মানিক, মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক আহবায়ক আলহাজ্ব শফিউল আলম, সাবেক সদস্য সচিব নুরুল আবছার আনছারী, গুমানমর্দন ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সুলতানুল আলম চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজম, নাঙ্গল মোড়া ইউনিয়নের সাবেক আহবায়ক আবদুল রশীদ মেম্বার, সাবেক সদস্য সচিব সেলিম হাসান, ছিপাতলী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফারুকে আজম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার, মেখল ইউনিয়নের সাবেক আহবায়ক জসিম উদ্দিন সিকদার (এম.এ), সাবেক সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, গড়দুয়ারা ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কবির আহম্মদ মাস্টার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ ভূট্টো, উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাজী মোহসিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম, ফতেপুর ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন চেয়ারম্যান, সাবেক সম্পদক লোকমান চৌধুরী, চিকনদন্ডী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি জেবল হোসেন মজুমদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনছুর চৌধুরী, দক্ষিন মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন, শিকারপুর ইউনিয়নের সাবেক আহবায়ক ইউসুফ খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক ডায়মন্ড, বুড়িশ্চর ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মো. ইব্রাহিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম চৌধুরী, দক্ষিন পাহাড়তলী  সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রাশেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. ইলিয়াছ আলী, হাটহাজারী পৌর বিএনপি'র সাবেক আহবায়ক এম খায়রুন্নবী, সি. যুগ্ম আহবায়ক হারুন ডিলার।