বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ০১:১৮ পিএম
মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন চৌধুরী: দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।এতে রাজনৈতিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি যে ঘোলাটে হবে, তাতে সন্দেহ নেই।বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।এ দিকে বিএনপি এক দফা দাবি দিয়ে সরকার পতনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশ করে যাচ্ছে। দলটির নেতাদের এক দাবী, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। সরকারকে পদত্যাগ করে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বিভাগীয় সমাবেশ করার পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে দলটির। দলটির এক নেতা বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের
পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং তারেক রহমানের কথায়। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা আদালতে নয়, রাজপথে সমাধান করবে, এমনকি আগামী নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন মর্মে ঘোষণা দিয়েছেন তার এক আইনজীবী। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। অবশ্য টানা প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে নানা মাত্রা যোগ হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে তারা বড় জমায়েতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মনোবলে ধাক্কা দেয়ার কৌশল নিয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে বলে দেশে-বিদেশে প্রমাণ করতে চাইছে। এ জন্য আওয়ামী লীগও রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পাল্টা বক্তব্য দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার হুমকিসহ ‘খেলা হবে’ বলে হুঙ্কার দিয়েছে। এসব পাল্টাপাল্টি হুঙ্কারের মধ্যে দেশ বা জনগণের স্বার্থ আছে কিনা তা বিবেচনার বিষয়। বলা হয়, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। আবার রাজনীতিকে কৌশলের খেলাও বলা হয়। সবই কি কথার কথা নাকি অন্য কিছু?ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন মাঠে থাকছে। বিএনপির সিরিজ কর্মসূচিও চলছে। রাজনীতির খেলার মাঠে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির জোটে আর নেই ঘোষণার পর নতুন নামে নিবন্ধন পাওয়ার আবেদন এবং ফিরে আসার চেষ্টা খেলার অংশ হলে নির্ভয়ে থাকা যায় না। বরাবরই জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে ভাঙাগড়া ও নানা মেরুকরণের খেলা হয়। পর্দার আড়ালের খেলাও জমজমাট হয়। এবার নির্বাচনের এক বছর আগেই সেই খেলার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দল ও জোট গঠনের পাশাপাশি ভাঙনের সুরও শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টিতে এ ভাঙনের সুর বেশি। বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতাও বেড়েছে। নানা গুঞ্জণ ডালপালা মেলছে। ১০ ডিসেম্বরের পরে কি হবে, এমন প্রশ্ন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কথার কথা, মেঠো কথা-যা ই হোক, হুমকি-ধমকিমূলক কথা নানা প্রশ্নের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি করছে জনমনে। অনেকে মনে করছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে যে পাল্টাপাল্টি ব্যক্তব্য চলছে, তাতে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। বলা বাহুল্য, দেশের অর্থনৈতিক সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে ভালো যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের শঙ্কার কথা বলেছেন। নিত্যপণ্যের উচ্চদাম মারাত্মক পর্যায়ে। জ্বালানি ও বিদ্যুত সংকট, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন টানাপড়েনের মধ্যে, দিন দিন রিজার্ভ কমছে, এমন এক নাজুক পরিস্থিতি বিরাজমান। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে।কিছুদিন আগেও সমাবেশ দূরে থাক, বাসাবাড়িতেও থাকতে না পারা বিএনপি এখন সারাদেশে বিশাল বিশাল সমাবেশ করছে।শক্তি প্রদর্শনের মাত্রা ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই সরকার ও বিরোধীদল তাদের শক্তি দেখাতে চাইছে। উভয় দলের এই শক্তি প্রদর্শন ভিন্নদিকে না যাওয়াই কাম্য। সময়টা এখন এমন যে, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ তিক্ততার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। হুমকি পাল্টা হুমকিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের এই অপচেষ্টা বছরের পর বছর ধরে চলছে। সুস্থ্য রাজনীতি নেই বললেই চলে। রাজনীতির নামে চলছে, পারস্পরিক বিরোধিতা ও সংঘাত।শান্তিপূর্ণ সভা–সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের কর্মসূচি ও পরিকল্পনার কথা দেশবাসীকে জানাতে পারে। কিন্তু এসব কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে একে অপরকে দেখে নেওয়া এবং দেখিয়ে দেওয়ার আওয়াজ শান্তিকামী মানুষকে উদ্বিগ্ন না করে পারে না।দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে ভয়াবহ সংকটের মুখে, তখন কোনো পক্ষেরই এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যাতে দেশের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাজপথে ফয়সালা করা কিংবা রাজপথ দখল করার হুমকি-ধমকি কোনোভাবে কাম্য নয়।সবার ওপরে দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আর নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের সমাধানও করতে হবে আলোচনার মাধ্যমে; যদিও আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আলোচনাকে এড়িয়ে চলতেই অভ্যস্ত। তাদের মনে রাখতে হবে, প্রতিপক্ষকে রাজপথে মোকাবিলা কিংবা ফয়সালার পরিণাম কখনো মঙ্গলজনক হয় না।সবশেষে যা বলতে চাই তা হল, দু’টি বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উচিত হবে সহাবস্থানে বিশ্বাসী হওয়া এবং এক দল অন্য দলকে নির্মূল করে দেয়ার মনোভাব থেকে বিরত থাকা। লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট। ইমেইল: mdnasirchw@gmail
সাবস্ক্রাইব ইউটিউব চ্যানেল
লাইক ফেইসবুক পেইজ
মাহমুদুল হক আনসারী: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের নানা কর্মকান্ডে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। অত্যন্ত মানব... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রামের সবকিছুতেই জৌলুশ। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের এই শহরে প্রতিটি এলাকা থ... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: সারাদেশের জরুরী ফোন নাম্বার সমূহ এক ওয়েব সা... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: প্রতিনিয়ত বাড়ছে শব্দদূষণের মাত্রা। শব্দ দূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। শব্দ দূষণের... বিস্তারিত
আবছার উদ্দিন অলি: মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। আমাদের গৌরব ও অহংকার। ১৯৭১’ সালের এই দিনে বিশ্ব মান ... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ইসলাম বিশ্বজনীন জীবনাদর্শ। সমগ্র মানব বংশের প্রতিই তার সমান আহ্বান। কোন বিশেষ... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন বলেছেন, বর্তমান সরকা... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বর্তমান অবৈধ সরকার ল... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মা... বিস্তারিত
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, এই সরকার বাংলাদেশকে ... বিস্তারিত