নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়া স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তার লেলিয়ে দেয়া বাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
আজ ১৪ জুন (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ আনেন উক্ত উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়া ৫ জন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে চশম প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল মালেক মানিক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক
সম্পাদক ও মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন, পরৈকোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আলী, ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান জিয়াউল ইসলাম, টেলিফোন প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ নাজিম উদ্দিন।
এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা, নির্বাচনী অফিস ও মাইক ভাঙচুর এমন কি কর্মীদের ওপর হামলাসহ পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া প্রতিনিয়ত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস ও বাড়ি ঘরে সশস্ত্র ব্যক্তিরা মোটর সাইকেল দিয়ে মহড়া দেয়ায় এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করারও অভিযোগ আনেন।
সম্মেলনে পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে চশম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল মালেক মানিক বলেন, ১৫ জুন বুধবার আনোয়ারা ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচন। যখন আমরা ভোটের জন্য প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাওয়ার কথা সেখানে নিরুপায় হয়ে আজ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিকদের দারস্থ হয়েছি। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা এবং আমাদের কর্মীরা এমনকি নারীরাও অসহায় অবস্থায় ঘরে বাহিরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন এবং প্রধানমন্ত্রীর নিকট আশ্রয় প্রার্থনার জন্য এসেছি। গত ১৩ জুন সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় লালাবাজারে আছরের নামাজ আদায় করে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন অফিসে এলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজিজুল হক বাবুলের সন্ত্রাসী বাহিনী আনোয়ারা সদর ইউপি চেয়ারম্যান অসীম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মামুন, দক্ষিণ জেলা শিশু কিশোর মেলার সভাপতি আলমগীর, ডা: নীলকান্ত বিষু, বখাটে শাহাদাত, ডেবিট, সাইফুল ইসলামসহ সন্ত্রাসীরা এসে তার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। তাকে মেরে মাটিতে লুটিয়ে ফেলে। তিনি প্রাইভেট চিকিসকের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন। তালসরা গ্রামের মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক মেম্বার সালামত আলী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আহমদ নবীর উপরও হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করা হয়েছে। আবুল কালামের নেতৃত্বে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুলের সন্ত্রাসী বাহিনীরা তাদের উপর হামলা চালায়। একইসময়ে কালীগঞ্জ বাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান জিয়াউল ইসালামের নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাবুলের সন্ত্রাসীরা একই কায়দায় হামলা চালায়। ওই হামলায় মামুর খাইন গ্রামের জাহাঙ্গীর, বোরহান, আবছার আহত হন। এই ঘটনায় তারা সিএনজি ট্যাক্সি এবং মাইক ভাঙচুর করে।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, মাহতা রাস্তার মাথায় মোহাম্মদ আলী আনারস প্রতীকের প্রচারণাকালে সিএনজি ট্যাক্সি, মাইক ভাঙচুর এবং প্রচারকদের বেদম প্রহার করে। এছাড়া গত এক সপ্তাহ ধরে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল এবং তার সন্ত্রাসী দল দ্বারা আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রমে বাঁধা প্রদান করে আসছে। আনোয়ারা অপর ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরাও তার এই সন্ত্রাসী কাজে সহযোগিতা করছে। আমরা তাদের বাঁধা অতিক্রম করে জনগনের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু গত সোমবার (১৩ জুন) পুলিশ এবং বহিরাগত সন্ত্রীরাও বাবুলের সন্ত্রাসী দলের সাথে যোগ দিয়েছে। তাদের নির্যাতন নিপীড়নে আমরা প্রার্থীরা এবং আমাদের কর্মীরা আজ ভোটের আগের দিন ঘর ছাড়া।
পরৈকোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আলী বলেন, আমাদের ১৫ নেতা কর্মীরকে গ্রেফতারের মাধ্যমে একটি আতংক ভীতির সঞ্চার করেছেন এবং অনেক নেতা কর্মীর ঘর বাড়ী ভেঙ্গে দিয়েছেন। অনেক নেতাকর্মীকে ঘর বন্দি করে রেখেছেন। আমরা এখন নির্বাচনের কথা চিন্তা করব সেটাতো অনেক দূরের কথা, এখন নিজের জান-মাল, স্ত্রী-সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে আজ নির্বাচনী পরিবেশ নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোন ভুমিকা রাখছে না। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পুলিশ সুপার, সরকারী সকল সংস্থা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে এই ৫জন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন কমিশন অফিসে নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।