নিউজগার্ডেন ডেস্ক: সাতকানিয়ায় রোহিঙ্গাদের স্মার্ট কার্ড দিতে বাঁধা দেয়ায় মিজানুর রহমান নামে এক সংবাদ কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রোহিঙ্গা জাবেদকে স্মার্ট কার্ড দিতে বাঁধা দেয়ায় মিজানুর রহমানকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করেছে স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন চৌধুরী। আজ ২৯ নভেম্বর (সোমবার) সাতকানিয়া উপজেলার ১৬ নং সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
আহত মিজানুর রহমান জানান, ১৬ নং সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে বসবাসরত রোহিঙ্গা নাগরিকদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে

জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান ও ভোটার করছে। মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে তার এরূপ কর্মকান্ডের ব্যাপারে এলাকার লোকজন মুখ খুলতে ও প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয় পত্র বানিয়ে দিচ্ছে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। দেশের প্রচলিত আইন, কড়া নজরদারী তোয়াক্কা না করে শুধু টাকার বিনিময়ে শত শত রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে বাংলাদেশি বনে গেছে এমন অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীর।
সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন চৌধুরী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাদের নিকট আত্মীয়-স্বজন পরিচয়ে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধনের পাশাপাশি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র সংগ্রহ করে দিচ্ছে। পরবর্তিতে ভোটার হালনাগাদের সময় জোর পূর্বক তদবির চালিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে জাতীয় পরিচয় পত্র পেয়ে দিতে সহযোগিতা করে থাকে ওই চেয়ারম্যান ও তার দলবল। তাদের অনুসারী বাড়ানোর জন্য এবং ভোট ব্যাংক তৈরির উদ্দেশ্যে এসব অপকর্মে পা দিয়ে থাকেন তারা।
আহত মিজানুর রহমান আরো জানান, কাল ৩০ নভেম্বর সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ৯নং ওয়ার্ডে স্মার্ট কার্ড বিতরণের দিন ধার্য্য আছে। সেই প্রেক্ষিতে আমি আজ ২৯ নভেম্বর দুপুর অনুমান ২ টায় সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আমার স্মার্ট কার্ড টোকেন স্লিপের জন্য উপস্থিত হই। তথায় আনুমানিক সাড়ে ৩ টায় আমি উপস্থিত থাকাবস্থায় রোহিঙ্গা নাগরিক চেয়ারম্যান কার্যালয় হতে স্মার্ট কার্ডের জন্য টোকেন সংগ্রহ করা কালে তথায় দায়িত্ব রত স্মার্ট কার্ডের টোকেন প্রদান কর্মকর্তাদের রোহিঙ্গা জাবেদ মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক হওয়ার বিষয়টি জানালে কর্মকর্তাগণ বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়ে আর টোকেন প্রদান করেনি। তাৎক্ষনিক রোহিঙ্গা জাবেদ বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে চেয়ারম্যান কার্যালয় হতে বের হয়ে টোকেনের লাইনে এসে কোন কথা ছাড়া আমাকে উপর্যপুরি লাথি, কিল, ঘুষি মেরে আমাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে গলা টিপে ধরে। আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে আহত করে এবং আমার পরনের শার্ট ছিড়িয়া ফেলে। চেয়ারম্যান আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে যে, চেয়ারম্যান যাকে ইচ্ছা তাকে ভোটার বানাবে। যদি আমি উক্ত ঘটনার ব্যাপারে কোথাও কোন অভিযোগ দিই আমাকে প্রাণে হত্যা করবে, মিথ্যা মামলায় জড়িত করে হয়বানী করবে। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে চেয়ারম্যানের কবল হতে আমাকে উদ্ধার করে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ভিতরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করি।
এ ঘটনার ব্যাপারে সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার এস.ডি আর নং- ৩২৩১, তারিখঃ ২৯/১১/২০২১ ইং।