দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ভূমি অফিসে চাকরী করার সুবাদে  এলাকার লোকজনকে জিম্মি  তহসিলদার’রা বিভিন্ন অজুহাতে টাকার হাতিয়ে নেয়া হয় বলে জানা গেছে।  জায়গা জমির আর, এস বি,সের মালিকদের রয়েছে নামের ও জামাভাগের গরমিল। যেসব জমির মালিকানা ঠিক রয়েছে এসব জমির ও করতে হয় নামজারী। তাছাড়া জমি কেনা কাটার ক্ষেত্রে নামজারী প্রয়োজন রয়েছে। অপরদিকে জমি মালিকানা নিয়ে পক্ষদ্বয়ের বিরোধ সৃষ্টি হলে একে অপরের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগের  উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দাখিল করেন।  এসব সমস্যা দেখভাল করার দায়িত্ব  ভূমি অফিসের তহসিলদার (উপÑসহকারী ভূমিকর্মকর্তা) হলে ও তারা  সোজা পথে না গিয়ে ভুক্তভোগীদের হয়রানী করার লক্ষে নানা ছুতা বের করে। তাদের জিম্মি করে মোটা অংকের টাকার উপরি পাওনা  আদায় করে। কেউ যদি তাদের চাহিদা মত টাকা দিতে অপারকতা প্রকাশ করে তাকে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। তারা সমস্যার সমধান কোথাও খুজেঁ পায় না। ফলে তারা অনন্যোপায় হয়ে হালের গরু বিক্রি কিংবা দাদন টাকা নিয়ে তহসিলদারকে ঘুষ দিয়ে  কাজ আদায় করে নেয়।  টাকা না দিলে তাদের ফাইল লাল ফিতায় বন্দি হয়ে থাকে। অথচ তাদের চাকরী প্রবিধান মালা মতে দায়িত্ব হচ্ছে এলাকার মানুষের জায়গা জমির কাগজপত্র সঠিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট উত্থাপন করা। তারা তা না করে  উল্টো হয়রানী করে। সূত্রমতে তহসিলদার’রা  ঘুষের টাকা খেতে খেতে অভ্যস্থ হয়ে সরকারী টাকাও আতœসাৎ করতে  দ্বিধাবোধ করেনি। এরকম একটি ঘটনা ঘটিয়েছে  তহসিলদার শাহদাৎ হোসেন। তিনি ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা ভূমি উন্নয়ন কর সরকারী কোষাগারে জমা  না দিয়ে আতœসাৎ করেন। যা জেলা প্রশাসনের তদন্তে ধরা পড়েছে।  তিনি ইতিপূর্বে সাতকানিয়ায় তহসিলদার (উপÑসহকারী ভূমিকর্তা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার বাড়ী ও সাতকানিয়ার খাগরিয়া।  জানা যায় সাতকানিয়ার কয়েকজন তহসিলদার অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তারা হলেন তহসিলদার (উপÑসহকারী ভূমিকর্মকর্তা) দিদারুল আলম  জাহাঙ্গীর আলম আজিম  সিরাজুল ইসলাম ও নূরুল আলম সিদ্দিকী (সহকারী তহসিলদার)। তারা কিন্তু বর্তমানে এখানে নেই। অন্যত্রে চাকরী করছেন। তবে তাদের কয়েকজন সহযোগি এখানে চাকরী করেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন  তুলাতলী ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত তহসিলদার ইলিয়াছ  সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহসিলদার মঈনদ্দিন  খাগরিয়া ভূমি অফিসের সহকারী তহসিলদার মর্তজা আলী  দেওদিঘী ভূমি অফিসের সহকারী তহসিলদার  আবু তৈয়ব ও বাজালিয়া ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক শওকত আলী। জানা যায় বাজালিয়া ভূমি অফিসের চুক্তিভিত্তিক ঝাড়ুদার বন মজুমদার বিপুল সম্পদের মালিক। তার রয়েছে জমি কমিউনিটি সেন্টার ঔষুধের দোকান ও গাড়ি।একজন ঝাড়–দারের এত সম্পদের মালিক হওয়ায় তারা এখন মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। তারা এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ বহাল তবীয়তে  করার সুযোগে অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়ে জমির মালিকদের হয়রানী করে বলে অভিযোগ  উঠেছে। সূত্রমতে  সহকারী তহসিলদার ইলিয়াছ  সাতকানিয়ায় চাকরী করার পর পাশর্^তবর্তী চন্দনাইশের  দোহাজারী ভূমি  অফিসে বদলী হয়ে ছিলেন। এই কর্মস্থলে দুর্নীতি করায় উপজেলা চেয়ারম্যান  আবদুল জব্বার চৌধুরীর হস্তক্ষেপে চন্দনাইশ থেকে বদলী হয়ে যায়। এরপর তার নিজ এলাকা কর্ণফুলী ভূমি অফিসে যোগদান করেন। উক্ত কর্মস্থলে চাকরী করতে না করতে পুনরায়া সাতকানিয়ার তুলাতলী ভূমি অফিসে যোগদান করেন। এখানে এখনো বহাল তবীয়তে কর্মরত রয়েছেন। জানা যায় তিনি  এখানকার টাকার লোভ ভুলতে পারছেন না। বার বার একইস্থানে চাকরী করা রহস্য কি জনমনে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্রমতে সাতকানিয়ার ভূমি অফিসে অর্ধাশতাধিক দালাল রয়েছে। দুর্নীতিবাজ তহসিলদারের ফলে তারা এখানে দালালী করার সুযোগ পেয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ভুক্তভোগীদের মাঝে স্বস্তির নিঃশ^াস ফিরে এসেছে।